অচল পয়সার সচল গল্প
হে বৃদ্ধ, আমি তেমাথার ঘনদূর্বাদল নই, আমি সদ্যচষা মিহিদানা
মাটি নই, আমি মধ্যমাঠের জোড়া হিজল নই, আমি রায়দের মজা পুকুর নই। আমি নই একলা ডাহুক,
আমি কৃষ্ণনবমীর তারা ভরা আকাশ নই—আমি এক নাদান বালক। হে বৃদ্ধ সমৃদ্ধ, তোমার বিড়বিড়
ফিশফিশ বিবরণ আমি বুঝতে পারি না কিছুতেই।
হে বৃদ্ধ, ভাটিবেলায় তুমি গোপালের ঘর, শরিকের মিলিত উঠোন,
বাড়ির বাড়া ভাত ফেলে পালিয়ে বেড়াও এগাঁও সেগাঁও। অচল পয়সার শব্দ তুলে কোন হালট ধরে
কোথায় যাও? তোমার সঙ্গে থুত্থুরে জরা, ঘর্ঘর ব্যাধি, নাছোড়বান্ধা ঝুলঝুলে মৃত্যু হাঁটতেই
থাকে-- তোমার একলা বেলার নাগাল খুঁজে পাই না।
হে বৃদ্ধ, ধুলোয় ধুলোয় পথ উড়িয়ে কোথা যাও তুমি? যাবার আগে
বলে কি যাবে না—তোমার আমজামসুখ, ভেজা কাঠের ধোঁয়া-ধিকিজ্বলা, পুরোনো চালের ভ্যাপসা
গন্ধ, কীটধরা আটার বমিভাব রুটি, বাঁশের খুঁটির নুয়েপড়া ঘর, টিনের থালায় পাখির খেয়াল,
ভাগের গোরুর লাঙল জোয়াল—তোমার চোয়ালে সবই লেখা আছে— হে বৃদ্ধ, গত শতকের ঘাড়গুঁজে মরা
তাজা গল্পের বেদ বেদনা তুমি না বললে, মানুষের ইতিহাস গালগল্পে বিকৃত হবে।
নার্সিং হোম
যদি সুযোগ হয়,
নার্সিং হোমেই আসব ফিরে
ডেটলশুদ্ধ ঘর, ধবধবে শাদা পবিত্র বিছানা,
দেয়ালে দেয়ালে মুখস্থ আশ্বাস,
বাড়ির লোকের কুকুরকাতর মুখ,
ঘাটের মড়া দাঁড় করিয়ে ব্যাপারির পারানি আদায়
আসল নকল সব একাকার এই লৌকিক হোমে—
যদি সুযোগ হয়, ফিরে আসব এখানেই--
এক ভ্রমণে মৃত্যুর স্বাদ মেটে না নার্সিং হোমে।
(চিত্রঋণ : ভিনসেন্ট ভ্যান
গঘ)
দুটো লেখাতেই আত্মজীবনীর হাহাকার,,,,,,,,,,,,, তবে ছুঁয়ে সাজিয়ে দিয়েছে ভাঙনের দোপাটি,,,,,,
ReplyDeleteধন্যবাদ প্রিয় বিশ্বরূপদা।
Deleteঅনবদ্য! নতুনের ঘ্রাণ পেলাম।
ReplyDeleteভালো থেকো প্রিয় রিপন, প্রিয় কবি।
Deleteঅশেষ ধন্যবাদ ও ভালোবাসা।
ReplyDelete